এন্টোনভ এএন-২২৫: ইউক্রেনে ধ্বংস হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিমান
পটভূমি
এন্টোনভ এএন-২২৫, যা ম্রিয়া (“স্বপ্ন” ইউক্রেনী ভাষায়) নামেও পরিচিত, ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান। এটি প্রাথমিকভাবে ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বুরান মহাকাশযান বহন করার জন্য নির্মিত হয়েছিল। বুরান প্রকল্প বাতিল হওয়ার পর, এএন-২২৫ কে ভারী বেসামরিক এবং বাণিজ্যিক প্রকল্পগুলির জন্য পুনর্নির্মাণ করা হয়।
ইউক্রেনে ধ্বংস
২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সালে, রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনে আক্রমণ করে। আক্রমণের চতুর্থ দিনে, এএন-২২৫ কে কিয়েভের কাছে একটি বিমানঘাঁটিতে ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিমানটি তখন রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছিল এবং উড্ডয়ন করতে পারছিল না।
ইউক্রেনী কর্মকর্তারা ম্রিয়াকে পুনর্নির্মাণের শপথ নিয়েছে এবং এন্টোনভ সংস্থা বলেছে যে তারা প্রতিস্থাপনের জন্য অনুমান করা ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচের জন্য রাশিয়ার কাছে দাবি জানাবে।
নকশা এবং ক্ষমতা
এএন-২২৫ ছিল সত্যিই একটি অনন্য বিমান। এর ডানার দৈর্ঘ্য ছিল ২৯০ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ছিল ২৭৬ ফুট। এটি ৫২৮ মাইল প্রতি ঘন্টা বেগে ৫৫১,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত পণ্য পরিবহন করতে পারত।
এএন-২২৫ ছয়টি ইঞ্জিন দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছিল, যা এটিকে ব্যতিক্রমী শক্তি এবং উত্তোলন ক্ষমতা প্রদান করেছিল। এর ভারী পণ্য বোঝার জন্য একটি শক্তিশালী ফিউজলেজ এবং ল্যান্ডিং গিয়ারও ছিল।
মানবিক মিশন
এর পরিচালনা ইতিহাস জুড়ে, এএন-২২৫ বিশ্ব জুড়ে মানবিক সহায়তা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি ২০১০ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর হাইতিতে ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করেছিল এবং সিওভিআইডি-১৯ মহামারীর সময় চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহন করেছিল।
বিমানটির বিশাল পণ্য বহন ক্ষমতা এবং দীর্ঘ পাল্লা এটিকে দুর্যোগে কবলিত অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে সাহায্য পরিবহনের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ বানিয়েছিল।
ঐতিহ্য
ম্রিয়ার ধ্বংস বিমান চালনা সম্প্রদায় এবং সারা বিশ্বের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ক্ষতি। এটি মানবিক প্রতিভা এবং প্রকৌশল দক্ষতার প্রতীক ছিল।
বিমানটির ঐতিহ্য চলতে থাকবে মানবিক মিশনগুলির মাধ্যমে যা এটি পরিচালনা করেছে এবং এটি বিমান চালনা উত্সাহীদের প্রজন্মকে যে অনুপ্রেরণা দিয়েছে তার মাধ্যমে।
বিশেষজ্ঞ মন্তব্য
জাতীয় বিমান এবং মহাকাশ সংগ্রহশালার বিমান পরিবহন বিভাগের কিউরেটর বব ভ্যান ডের লিন্ডেন এএন-২২৫ সম্পর্কে বলেছেন: “এটি একটি অত্যন্ত দক্ষ সরঞ্জাম ছিল যা বিশ্বজুড়ে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী পরিবহনে বিশেষভাবে দক্ষ ছিল।”
তিনি আরও বলেছেন যে বিমানটির ধ্বংস হওয়া বিমান চালনা শিল্প এবং যারা মানবিক সহায়তার উপর নির্ভর করে তাদের জন্য একটি “বড় ক্ষতি”।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
এন্টোনভ সংস্থা ম্রিয়াকে পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। নতুন বিমানটি মূল নকশার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হবে তবে এতে আধুনিক উপকরণ এবং প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
কোম্পানি অনুমান করেছে যে নতুন ম্রিয়া পাঁচ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। এটি মানবিক মিশন এবং অন্যান্য বিশেষায়িত পণ্য পরিবহন কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হতে থাকবে।