Home বিজ্ঞানবৈজ্ঞানিক যোগাযোগ বিজ্ঞানে ভাষাগত পক্ষপাতের প্রভাব: অন্তর্ভুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়া

বিজ্ঞানে ভাষাগত পক্ষপাতের প্রভাব: অন্তর্ভুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়া

by রোজা

বিজ্ঞানে ভাষাগত পক্ষপাতের প্রভাব

বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ইংরেজির প্রাধান্য

ইংরেজি বিজ্ঞানের প্রধান ভাষা হয়ে উঠেছে, অধিকাংশ মর্যাদাপূর্ণ বৈজ্ঞানিক জার্নাল ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়। ইংরেজি ভাষার বিজ্ঞানের প্রতি এই পক্ষপাতের উল্লেখযোগ্য পরিণতি হতে পারে, কারণ এটি নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর দিকে পরিচালিত করতে পারে:

  • গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার উপেক্ষা করা: ইংরেজি ভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় প্রকাশিত গবেষণা আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিজ্ঞানীদের দ্বারা উপেক্ষিত হতে পারে, যার ফলে সহযোগিতা এবং উদ্ভাবনের জন্য হারানো সুযোগ তৈরি হয়।
  • গবেষণার পুনরাবৃত্তি: বিজ্ঞানীরা অজান্তেই এমন গবেষণা পুনরাবৃত্তি করতে পারেন যা ইতিমধ্যে পরিচালিত হয়েছে কিন্তু ইংরেজি ভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।
  • তথ্য অ্যাক্সেস সীমিত করা: গবেষক এবং নীতিনির্ধারকরা যারা ইংরেজি বলেন না তাদের গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক তথ্য অ্যাক্সেস করতে অসুবিধা হতে পারে, যা তাদের সুষ্ঠু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত করে।

ইংরেজি ভাষা ছাড়া অন্য ভাষার বিজ্ঞান অ্যাক্সেস করার চ্যালেঞ্জ

বিজ্ঞানে ইংরেজির প্রাধান্য ইংরেজি ভাষা ছাড়া অন্য ভাষার গবেষণা অ্যাক্সেস করার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। ইংরেজি ভাষা ছাড়া অন্য ভাষার অনেক গবেষণাপত্রের ইংরেজি শিরোনাম, সারাংশ বা কীওয়ার্ড থাকে না, যা ডেটাবেজ অনুসন্ধানে সেগুলিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তোলে। বৈচিত্র্য সংরক্ষণের মতো ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বিশেষভাবে তীব্র, যেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের বেশিরভাগই ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলিতে গবেষকরা সংগ্রহ ও প্রকাশ করেন।

অনুবাদ এবং অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজন

বিজ্ঞানে ভাষার বাধা কাটিয়ে উঠতে, বৈজ্ঞানিক গবেষণার অনুবাদকে একাধিক ভাষায় বাড়ানো জরুরি। জার্নাল এবং বৈজ্ঞানিক একাডেমিগুলিকে লেখকদের তাদের কাজের সারাংশ বিভিন্ন ভাষায় প্রদান করতে উৎসাহিত করা উচিত। উপরন্তু, গবেষণা পর্যালোচনা সংকলনের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন ভাষার বক্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যাতে নিশ্চিত করা যায় যে গুরুত্বপূর্ণ কাজ উপেক্ষিত হচ্ছে না।

ইংরেজি দক্ষতা প্রচারের সুবিধা এবং চ্যালেঞ্জ

বিজ্ঞানে ইংরেজি দক্ষতা প্রচার করলেও ভাষাগত বাধাগুলিকে ভাঙতে সাহায্য করতে পারে, এটি ইংরেজি ভাষার জন্য অ-দেশীয়দের জন্য যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করে তা স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ। নতুন ভাষা শেখা একটি সময়সাপেক্ষ এবং কঠিন প্রক্রিয়া হতে পারে এবং এটি সমস্ত বিজ্ঞানীর জন্য সম্ভব নাও হতে পারে। উপরন্তু, এমন পরিস্থিতি এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ যেখানে ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলির বাইরে থেকে আসা বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানী সম্প্রদায় থেকে প্রান্তিককরণ বা বাদ পড়ে।

ভাষার বাধা উপেক্ষা করার বিপদ

বিজ্ঞানে ভাষার বাধা উপেক্ষা করার বিপজ্জনক পরিণতি হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকে উপেক্ষা করা এড়ানো যায় এমন সংকটের দিকে পরিচালিত করতে পারে, যেমন এশিয়ায় H5N1 এভিয়ান ফ্লু প্রাদুর্ভাবের প্রতি দেরিতে সাড়া দেওয়া। উপরন্তু, ইংরেজি ভাষার বিজ্ঞানের প্রাধান্য অন্য দেশগুলির বিজ্ঞানীদের কাজকে নির্দিষ্ট দেশগুলির বিজ্ঞানীদের কাজের উপরে উন্নীত করতে পারে, যা বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বিস্তারে একটি পক্ষপাত তৈরি করে।

একটি বৈশ্বিক সমাধানের প্রয়োজন

বিজ্ঞানে ভাষার পক্ষপাতের সমস্যা মোকাবেলার জন্য একটি বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন। জার্নাল, বৈজ্ঞানিক একাডেমি এবং তহবিল প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে অন্তর্ভুক্তিকে প্রচার করতে এবং এটি নিশ্চিত করতে একসাথে কাজ করতে হবে যে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ভাষা নির্বিশেষে সবার জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য। এর মধ্যে রয়েছে অনুবাদ প্রচেষ্টা বাড়ানো, বৈজ্ঞানিক প্রকাশনাগুলিতে একাধিক ভাষা ব্যবহারকে উৎসাহিত করা এবং ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলির বাইরে থেকে আসা বিজ্ঞানীদের সমর্থন করা। ভাষাগত বাধা ভেঙে আমরা একটি আরও ন্যায্য এবং সহযোগিতামূলক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় গড়ে তুলতে পারি যা সবার উপকারে আসবে।