বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো পৃথিবীর ম্যান্টলে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়েছেন
ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টাগুলির একটি চলছে, যেখানে ইন্টিগ্রেটেড ওশান ড্রিলিং প্রোগ্রাম (IODP) এর বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ম্যান্টল পর্যন্ত 3.7 মাইল গভীর পর্যন্ত ড্রিল করার পরিকল্পনা করছেন। এই অভূতপূর্ব মিশনের লক্ষ্য হল প্রথমবারের জন্য ম্যান্টল থেকে পাথরের নমুনা ফিরিয়ে আনা, যা বিজ্ঞানীদেরকে গ্রহের অভ্যন্তর সম্পর্কে নতুন অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে।
পৃথিবীর ম্যান্টল: একটি রহস্যময় স্তর
পৃথিবীর ম্যান্টল হল ভূত্বকের নিচে অবস্থিত শিলার একটি আধা-গলিত স্তর। এটি গ্রহের আয়তনের 84% এরও বেশি এবং ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরি போன்ற আমাদের বিশ্বকে আকৃতি দেওয়া অনেক ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া চালানোর জন্য দায়ী। যাইহোক, এর গুরুত্ব সত্ত্বেও, ম্যান্টল সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানি।
ম্যান্টলে ড্রিলিংয়ের চ্যালেঞ্জ
ম্যান্টলে ড্রিলিং হল একটি অবিশ্বাস্যভাবে চ্যালেঞ্জিং কাজ। এরকম গভীরতার চরম তাপ এবং চাপ ড্রিল বিটগুলির শিলা ভেদ করাকে কঠিন করে তোলে। উপরন্তু, গর্তটি অত্যন্ত সংকীর্ণ হওয়া আবশ্যক, যা শিলা নমুনা সংগ্রহ করাকে কঠিন করে তোলে।
IODP এর পরিকল্পনা
IODP দল প্রশান্ত মহাসাগরের তলের মধ্য দিয়ে ড্রিল করার পরিকল্পনা করছে, যেখানে ভূত্বক সবচেয়ে পাতলা। তারা চিক্যু নামক একটি ড্রিলিং জাহাজ ব্যবহার করবে, যা এমন টাংস্টেন কার্বাইড ড্রিল বিট দিয়ে সজ্জিত যা শক্ত পাথরের মধ্য দিয়ে খনন করতে পারে। এই প্রকল্পটির খরচ অন্তত 1 বিলিয়ন ডলার হবে এবং সম্পূর্ণ হতে বছরের পর বছর সময় লাগতে পারে।
মিশনের গুরুত্ব
যদি সফল হয়, তাহলে এই মিশনটি পৃথিবীর ম্যান্টল সম্পর্কে আমাদের বোঝাকে আমূল বদলে দেবে। বিজ্ঞানীরা সরাসরি ম্যান্টল থেকে পাথরের নমুনা অধ্যয়ন করতে সক্ষম হবেন, যা এর গঠন, গঠন এবং গতিশীলতা সম্পর্কে নতুন অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে। এই জ্ঞান আমাদের পৃথিবী কীভাবে কাজ করে তা আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করবে এবং ভূপদার্থবিজ্ঞান এবং ভূতত্ত্বের মতো ক্ষেত্রে নতুন আবিষ্কারের দিকে পরিচালিত করতে পারে।
নতুন প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের অনুপ্রাণিত করা
এর বৈজ্ঞানিক তাত্পর্যের বাইরে, এই মিশনের নতুন প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের অনুপ্রাণিত করার সম্ভাবনাও রয়েছে। নাসার অ্যাপোলো মিশন এবং সাম্প্রতিক কৌতূহল রোভারের মতো, এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি তরুণদের কল্পনাশক্তিকে আকর্ষণ করতে পারে এবং তাদের বিজ্ঞানে কর্মজীবন অনুসরণ করতে উৎসাহিত করতে পারে।
ড্রিলিংয়ের অগ্রগতি এবং চ্যালেঞ্জ
IODP দল ইতিমধ্যেই জাপানের উপকূল থেকে প্রায় 7,000 ফুট নিচে ড্রিল করে একটি বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করেছে। যাইহোক, ম্যান্টলে পৌঁছতে তাদের এখনও দীর্ঘ পথ যেতে হবে। দলকে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে:
- এতো গভীরতায় চরম তাপ এবং চাপ
- ড্রিল বিটগুলি ঘন ঘন প্রতিস্থাপন করার প্রয়োজন
- গর্তের সংকীর্ণতা
- শিলা নমুনা সংগ্রহের অসুবিধা
সম্ভাব্য প্রতিদান
চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, এই মিশনের সম্ভাব্য প্রতিদানটি অত্যন্ত বেশি। ম্যান্টল থেকে পাথরের নমুনা অধ্যয়ন করে বিজ্ঞানীরা সম্পর্কে নতুন অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করতে পারেন:
- ম্যান্টলের গঠন এবং গঠন
- ম্যান্টলের গতিশীলতা এবং ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া চালানোর তার ভূমিকা
- পৃথিবীর ইতিহাস এবং সৌরজগতের গঠন
এই জ্ঞান বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রের বিস্তৃত পরিসরে নতুন আবিষ্কারের দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং আমাদের গ্রহ এবং মহাবিশ্বের তার স্থানকে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে।