বৃক্ষব্যাঙ: খাপ খাওয়ানোর দক্ষতা
ভূমিকা
ব্যাঙের মতো উভচর প্রাণীগুলো তাদের পাতলা চামড়ার জন্য পরিচিত, যা তাদের সহজেই জল শোষণ করতে সাহায্য করে। যাইহোক, কিছু বৃক্ষব্যাঙ, যেমন দক্ষিণ আমেরিকার বানর ব্যাঙ, উল্লেখযোগ্য খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা তৈরি করেছে যা তাদের শুষ্ক পরিবেশে টিকে থাকতে সক্ষম করে।
শুষ্ক অবস্থার জন্য মোমের আস্তরণ
অন্য বেশিরভাগ উভচর প্রাণীর থেকে আলাদা, দক্ষিণ আমেরিকার বানর ব্যাঙ দীর্ঘ সময়ের জন্য সূর্যালোক এবং শুষ্ক বাতাস সহ্য করতে পারে। এটি একটি বিশেষায়িত খাপ খাওয়ানোর কারণে: তারা তাদের ত্বকের গ্রন্থি থেকে একটি মোমের পদার্থ নিঃসরণ করে এবং তাদের পা ব্যবহার করে তাদের পুরো শরীর জুড়ে ছড়িয়ে দেয়। এই মোমের আস্তরণ একটি বাধা তৈরি করে যা জলক্ষয় রোধ করে এবং তাদের আরও শুষ্ক বাসস্থানে টিকে থাকতে দেয়।
মিথ্যা হাইবারনেশন: একটি বিপাকীয় ধাঁধা
প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন যে দক্ষিণ আমেরিকার বানর ব্যাঙের মতো বৃক্ষব্যাঙ যখন চোখ বন্ধ করে স্থিরভাবে বসে থাকে, তখন হাইবারনেশন-এর মতো অবস্থায় চলে যায়। যাইহোক, ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ব্যাঙগুলি আদৌ নিষ্ক্রিয় নয়। তাদের বিপাকীয় হার স্বাভাবিক থাকে এবং তারা সক্রিয়ভাবে পোকামাকড়ের জন্য শিকার করে। বিশ্বাস করা হয় যে এই “হিমায়িত” আচরণ তাদের আরও কার্যকরভাবে আর্দ্রতা সংরক্ষণে সহায়তা করে।
গভীরতার মধ্যে জীবন: উপ-পৃষ্ঠীয় জীব খুঁজে পাওয়া
দক্ষিণ আফ্রিকার একটি সোনার খনিতে প্রায় দুই মাইলেরও বেশি গভীরে ইউরেনিয়ামের উপর টিকে থাকা ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা, যা পৃথিবীতে কোথায় জীবন থাকতে পারে সে সম্পর্কে আমাদের বোধগম্যতার সীমাকে প্রসারিত করে। এই আবিষ্কারটি ইঙ্গিত দেয় যে মঙ্গলেও একই রকম জীবন-रूप থাকতে পারে, যেখানে ইউরেনিয়াম এবং সম্ভাব্য জলের ভান্ডারও রয়েছে।
সোর্ডটেল মাছের অদ্ভুত ঘটনা
মাছের জগতে, পুরুষ উত্তর সোর্ডটেল মাছ একটি অস্বাভাবিক প্রণয় আচরণ প্রদর্শন করে। এটি মহিলাদের আকর্ষণ করার জন্য যথাসম্ভব উঁচুতে তার পাল-এর মতো পৃষ্ঠীয় পাখনা তোলে। যাইহোক, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মহিলারা ছোট পৃষ্ঠীয় পাখনাযুক্ত পুরুষদের পছন্দ করে। এই আত্মপরিপন্থী আচরণটি ব্যাখ্যা করা হয় অভ্যন্তরীণ যৌন নির্বাচনের মাধ্যমে, যেখানে পুরুষরা মহিলাদের প্রভাবিত করার চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ভয় দেখানোর জন্য একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
সংরক্ষণ মানচিত্রকরণ: হুমকির মুখে পড়া প্রজাতি চিহ্নিতকরণ
পাখি, স্তন্যপায়ী এবং উভচর প্রাণীদের হুমকির মুখে পড়া প্রথম বিস্তারিত বিশ্ব মানচিত্রগুলি নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই মানচিত্রগুলি প্রকাশ করে যে বিভিন্ন প্রজাতি বিভিন্ন অঞ্চলে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, প্রতিটি দলের জন্য উপযুক্ত সংরক্ষণ কৌশলের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে।
সূর্যমুখীর জিনগত জটিলতা
সূর্যমুখী, তাদের সরল চেহারার পরেও, জটিল জিনগত গঠন রয়েছে। কানসাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মরুভূমির পরিবেশে বসবাসকারী সূর্যমুখীতে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্সপোজন বা ডিএনএ-এর “লাফানো” অংশ রয়েছে। এই ট্রান্সপোজনগুলি সূর্যমুখীকে অন্যান্য গাছের সঙ্গে ক্রসব্রিডিং এড়াতে সাহায্য করে থাকতে পারে, যা এটিকে একটি স্বতন্ত্র প্রজাতি হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে দেয়।
উপসংহার
প্রাকৃতিক জগৎ বিভিন্ন পরিবেশে টিকে থাকার জন্য অসাধারণ খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা তৈরি করা আকর্ষণীয় এবং বৈচিত্র্যময় জীব দিয়ে পূর্ণ। শুষ্ক পরিবেশ সহ্য করতে পারে এমন বৃক্ষব্যাঙ থেকে শুরু করে ইউরেনিয়ামের উপর টিকে থাকা ব্যাকটেরিয়া পর্যন্ত, এই প্রাণীগুলি তাদের সহনশীলতা এবং সৃজনশীলতা দিয়ে আমাদের ক্রমাগত বিস্মিত এবং অনুপ্রাণিত করে।