জলবায়ু পরিবর্তনের মাইলফলক: CO2 এর মাত্রা 400 ppm এর কাছাকাছি পৌঁছেছে
বাড়ছে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা
মানব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, এ মাসের শেষেই বিশ্বের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) এর মাত্রা 400 অংশ পার মিলিয়নে (ppm) পৌঁছানোর পূর্বাভাস রয়েছে। এই মাইলফলকটি চলমান CO2 বৃদ্ধির একটি সুস্পষ্ট স্মারক এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করার জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
হাওয়াইয়ের একটি স্টেশন থেকে বিজ্ঞানীরা CO2 ঘনত্ব পর্যবেক্ষণ করেছেন, যেখানে সাধারণত মে মাসে মাত্রাগুলি সর্বোচ্চে পৌঁছায়। আজকের দিনে মাত্রাগুলি 399 ppm এ দাঁড়িয়েছে, এবং গবেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছে যে এটি এ মাসেই বা পরের বছরের শুরুর দিকে সর্বশেষে 400 ppm ছাড়িয়ে যাবে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
1958 সালের মার্চ মাসে, যখন বায়ুমণ্ডলীয় CO2 এর প্রথম পরিমাপগুলি নেওয়া হয়েছিল, তখন উত্তর গোলার্ধের CO2 মাত্রা ছিল 316 ppm। গবেষকরা অনুমান করেন যে, শিল্প-পূর্ববর্তী মাত্রাগুলি প্রায় 280 ppm এর কাছাকাছি ছিল। শিল্প বিপ্লবের আগে 8,00,000 বছর ধরে, CO2 মাত্রা কখনই 300 ppm এর বেশি ছিল না।
যাইহোক, শিল্পায়নের শুরু থেকে CO2 মাত্রা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। বর্তমান হারে, আমরা আগামী কয়েক দশকের মধ্যে 450 ppm এ পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
400 ppm মাইলফলকের তাৎপর্য
যদিও 400 ppm এর মাইলফলক কিছুটা এলোমেলো, বিজ্ঞানীরা CO2 মাত্রার ক্রমাগত বৃদ্ধি সম্পর্কে সতর্কতা জাগানোর ক্ষেত্রে এর গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। আমরা 390 ppm এ থাকি বা 400 ppm তে, বাস্তবতা হল যে বায়ুমণ্ডলীয় CO2 বাড়ছে এবং এর বৃদ্ধি অব্যাহত থাকারই সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজনৈতিক ও জনগণের প্রতিক্রিয়া
কিছু গবেষক এবং আইনজীবী আশা করেন যে 400 ppm এর সীমা অতিক্রম করলে রাজনীতিবিদ এবং জনগণ কাজে উদ্বুদ্ধ হবে। জলবায়ু পরিবর্তন শুধুমাত্র একটি বৈজ্ঞানিক বিষয় নয়, এটি একটি রাজনৈতিক বিষয়ও।
“আসুন আশা করি, 400 ppm এ পৌঁছানোটি জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে একটি নতুন জরুরি অনুভূতি তৈরি করতে একটি স্ফুলিঙ্গের ভূমিকা পালন করবে,” রেসপন্ডিং টু ক্লাইমেট চেঞ্জ লিখেছে। “তার চেয়েও বেশি, কিছু দশক পরে, যখন আমরা 450 ppm এর সীমায় পৌঁছব, তখন আমাদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য আমাদের আক্ষেপ করতে হবে।”
যাইহোক, এই মাইলফলকটি নীতি, মনোভাব বা কর্মের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
চ্যালেঞ্জ এবং উদ্বেগ
একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হল যে হাওয়াই স্টেশনটি, যা CO2 মাত্রা পর্যবেক্ষণ করে, বাজেট কাটার কারণে বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন যে, এটি CO2 মাত্রা ট্র্যাক করার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করার আমাদের ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।
“এটা কিছুটা নির্বোধ যে আমরা সকলেই উটপাখির মতো মাথা লুকিয়েছি,” বায়োজ地球রসায়নবিদ জিম হোয়াইট নেচারকে বলেছেন। “আমরা জানতে চাই না যে বায়ুমণ্ডলে কতটা CO2 আছে, যখন আসলে আমাদের আরও বেশি পরিমাণ মনিটর করা উচিত।”
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব
বায়ুমণ্ডলে CO2 মাত্রার বৃদ্ধির আমাদের গ্রহ এবং তার বাসিন্দাদের উপর অসংখ্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব রয়েছে:
- গ্লোবাল ওয়ার্মিং: CO2 একটি গ্রিনহাউস গ্যাস হিসেবে কাজ করে, বায়ুমণ্ডলে তাপ আটকে রাখে এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং ঘটায়।
- মহাসাগরের অ্যাসিডিফিকেশন: CO2 সমুদ্রের জলে দ্রবীভূত হয়ে কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি করে, যা সামুদ্রিক জীবনকে ক্ষতি করতে পারে।
- চরম আবহাওয়ার ঘটনা: বাড়তি CO2 মাত্রা ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহ এবং খরার মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলির ঘনত্ব এবং তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে যুক্ত।
- স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: উচ্চ মাত্রার CO2 শ্বাসযন্ত্র এবং কার্ডিওভাসকুলার সমস্যায় অবদান রাখতে পারে।
কর্মের ডাক
400 ppm এর মাইলফলক আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে স্ব-সন্তুষ্ট হওয়ার সামর্থ্য নেই বলে স্মরণ করিয়ে দেয়। নির্গমন কমানোর এবং এর প্রভাব কমানোর জন্য আমাদের এখনই পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
এতে রয়েছে:
- পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎসে রূপান্তর
- শক্তির দক্ষতা উন্নত করা
- বন এবং অন্যান্য কার্বন সিঙ্ক রক্ষা করা
- জলবায়ু সমাধানের গবেষণা এবং উন্নয়নে বিনিয়োগ করা
- সমস্ত সরকারি স্তরে জলবায়ু নীতির পক্ষে আন্দোলন করা
함께 কাজ করার মাধ্যমে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধান করতে পারি এবং আমাদের গ্রহের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যত তৈরি করতে পারি।