বিচ্ছুবোমা: প্রাচীন যুদ্ধের অস্ত্র
বিচ্ছুবোমার ইতিহাস
বিচ্ছুবোমা ছিল এক ধরনের অনন্য এবং মারাত্মক অস্ত্র যা প্রাচীনকালে হাত্রা দুর্গ শহরের বাসিন্দারা ব্যবহার করত, যা বর্তমানে ইরাকের অন্তর্গত। খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকে, হাত্রার জনগণ রোমান সৈন্যদের আক্রমণ থেকে তাদের শহরকে সফলভাবে রক্ষা করেছিল, লিজিওনারদের দিকে মারাত্মক বিচ্ছু দ্বারা পূর্ণ পাত্র ছুঁড়ে মেরে।
গ্রিক ফায়ার, বিষাক্ত তীর এবং স্করপিয়ন বোমা” বইতে প্রথম বিচ্ছুবোমার ব্যবহার নথিবদ্ধ করা হয়, যা লিখেছেন অ্যাড্রিয়ান মেয়র। মেয়রের গবেষণায় দেখা গেছে যে বিচ্ছুবোমার রেসিপিটি ছেলেদের, এমনকি কিছু মেয়েদের মধ্যেও জনপ্রিয় ছিল, যারা এই জীবন্ত “গ্রেনেড” তৈরি এবং ব্যবহার করতে পছন্দ করত।
বিচ্ছুবোমা তৈরির পদ্ধতি
প্রাচীন কালে বিচ্ছুবোমা তৈরির কৌশলটি ছিল বিচ্ছুর লেজের পিছনের অংশে সাবধানে থুতু ছিটানো। এর জন্য লোহার মতো স্নায়ু এবং নিখুঁত লক্ষ্যে আঘাত করার দক্ষতা প্রয়োজন ছিল। যাইহোক, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক দল একটি নিরাপদ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিল, যার মধ্যে প্রতিটি ফটো সেশনের আগে বিচ্ছুগুলিকে অবশ হয়ে পড়ার জন্য রেফ্রিজারেটরে রাখা হত।
বিচ্ছুবোমার উপাদান
বিচ্ছুবোমার প্রধান উপাদান, অবশ্যই, বিচ্ছু। বিচ্ছুবোমা তৈরিতে সর্বাধিক ব্যবহৃত বিচ্ছুর প্রজাতি ছিল ইরাকি ডেথ স্টলকার, একটি অত্যন্ত বিষাক্ত প্রজাতি। অন্যান্য উপাদানের মধ্যে থাকতে পারে মাটি, বালি বা অন্যান্য উপকরণ যা বোমার ওজন বাড়িয়ে এবং বোমা ছোঁড়াকে আরও কঠিন করে তুলত।
বিচ্ছুবোমার প্রভাব
যখন একটি বিচ্ছুবোমা শত্রুর দিকে ছোঁড়া হত, তখন বিচ্ছুগুলি ছড়িয়ে পড়ত এবং যে কারও সাথে এগুলির সংস্পর্শ হত তাকে কামড় দিত। ইরাকি ডেথ স্টলকারের কামড় অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক এবং এটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন পক্ষাঘাত এবং এমনকি মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
যুদ্ধে বিচ্ছুবোমার ব্যবহার
বিচ্ছুবোমা প্রাচীন যুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকরী অস্ত্র ছিল। এগুলো শহরগুলিকে রক্ষা করার, আক্রমণকারীদের প্রতিহত করার এবং এমনকি শত্রু নেতাদের হত্যার জন্য ব্যবহৃত হত। ঘনিষ্ঠ যুদ্ধে বিচ্ছুবোমার ব্যবহার বিশেষভাবে কার্যকর ছিল, যেমন অবরোধের সময়।
বিচ্ছুবোমার লেগ্যাসি
বিচ্ছুবোমা প্রাচীন যুদ্ধের উদ্ভাবন এবং নিষ্ঠুরতার একটি আকর্ষণীয় উদাহরণ। এটি একটি শক্তিশালী অস্ত্র ছিল যা শত্রুর ওপর প্রচুর যন্ত্রণা এবং দুর্ভোগ নিয়ে আসতে পারত। যদিও বিচ্ছুবোমা আর আধুনিক যুদ্ধে ব্যবহৃত হয় না, তবুও এটি একটি স্মারক হিসাবে রয়ে গেছে যে মানুষ তাদের নিজেদের এবং তাদের অঞ্চলকে রক্ষা করার জন্য কতদূর যেতে পারে।
অতিরিক্ত তথ্য
- বাগদাদ ব্যাটারি হল প্রাচীন একটি সামগ্রী যা কিছু লোক বিশ্বাস করে যে গণবিধ্বংসী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হত। এই ব্যাটারিটি ১৯৩৬ সালে ইরাকের বাগদাদের কাছে আবিষ্কৃত হয় এবং ধারণা করা হয় যে এটি পার্ব্বতী সাম্রাজ্যের (খ্রিস্টপূর্ব ২৪৭ – খ্রিস্টাব্দ ২২৪) সময়ের।
- জৈবরাসায়নিক অস্ত্র হল এমন অস্ত্র যা বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে শত্রুকে হত্যা করে বা অক্ষম করে। জৈবরাসায়নিক অস্ত্র শতাব্দী ধরে যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এটি আজও একটি হুমকি হিসাবে বিবেচিত হয়।
- অবশ হওয়া হলো কার্যকলাপ এবং বিপাক হ্রাসের একটি অবস্থা। প্রাণীদের ঠান্ডায় রেখে বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহার করে তাদের অবশ করা যায়।